আরও দেখুন
শুক্রবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। মূলত, EUR/USD বিশ্লেষণে আলোচনা করা সকল বিষয় GBP/USD-এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তবে, মূল পার্থক্য হলো পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মূল্য সাপ্তাহিক নিম্ন লেভেলের কয়েক পিপস উপরে থাকা অবস্থায় সাপ্তাহিক ট্রেডিং শেষ হয়েছে, যেখানে ইউরোর মূল্য সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হতে সক্ষম হয়েছে। সুতরাং, যদি সোমবার থেকে পাউন্ডের দরপতন আবার শুরু হয়, তবে তা আমাদের জন্য আশ্চর্যের বিষয় হবে না। ইউরোর মতো ফ্ল্যাট রেঞ্জে প্রবেশ করে আরও দরপতন এড়ানোর বিকল্প পাউন্ডের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে না। আমরা আগে ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের মূল্যের উল্লেখযোগ্য স্থিতিশীলতার কথা বলেছি, তবে এই স্থিতিশীলতারও সীমা রয়েছে। এখন মনে হচ্ছে পাউন্ড কার্যত লাগামহীন দরপতনের শিকার হচ্ছে।
শুক্রবার ননফার্ম পেরোল এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন ছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রে মজুরি বৃদ্ধি এবং কনজিউমার সেন্টিমেন্ট সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তবে, শেষের দুটি প্রতিবেদনের ফলাফল ট্রেডারদের বিশেষ নজর কাড়েনি। মজুরি 0.3% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পূর্বাভাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল, এবং ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান থেকে প্রকাশিত কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্সের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় সামান্য দুর্বল ছিল। পূর্বাভাস থেকে এই বিচ্যুতি নগণ্য বা একেবারেই না থাকায়, এই প্রতিবেদনগুলো এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি।
এই মুহূর্তে, পাউন্ড কেবল অলৌকিক ঘটনার প্রত্যাশা করতে পারে। সকল টাইমফ্রেমে এটি স্পষ্ট যে পাউন্ড কার্যত লাগামহীন দরপতনের শিকার হচ্ছে, এবং কোন বিষয়টি এই দরপতন থামাতে পারে তা অনিশ্চিত। এই সপ্তাহে কেবল দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে যেগুলো এই প্রবণতার পরিবর্তন করতে পারে, এমনকি তা অস্থায়ী ভিত্তিতে হলেও। এছাড়া, বর্তমানে মূল্যের নিচে শক্তিশালী কোনো সাপোর্ট লেভেল নেই। 5-মিনিট টাইমফ্রেমে, শুক্রবার ট্রেডিংয়ের কেবল একট সুযোগ ছিল—1.2269 লেভেলের আশেপাশে প্রাথমিকভাবে একটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। তবে, নন-ফার্ম পেরোল এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আগে যেকোনো পজিশন ক্লোজ করাই বুদ্ধিমানের কাজ হতো।
সর্বশেষ কমিটমেন্ট অব ট্রেডার্স (COT) রিপোর্ট অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাউন্ড স্টার্লিং নিয়ে কমার্শিয়াল ট্রেডারদের সেন্টিমেন্ট বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। লাল এবং নীল লাইন, যা কমার্শিয়াল এবং নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশনের প্রতিনিধিত্ব করে, প্রায়শই একে অপরকে অতিক্রম করে এবং সাধারণত শূন্যের কাছাকাছি রয়েছে। বর্তমানে, এই লাইনগুলো কাছাকাছি রয়েছে, যা লং এবং শর্ট পজিশনের প্রায় সমান সংখ্যা নির্দেশ করে।
সাপ্তাহিক টাইমফ্রেমে, মূল্য প্রথমে 1.3154 লেভেল ব্রেক করে নিচের দিকে যায় এবং পরবর্তীতে আরও নিচে নেমে ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে ফেলে। এই ব্রেক এই ইঙ্গিত দেয় যে, দীর্ঘমেয়াদে পাউন্ডের দরপতন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
সর্বশেষ COT রিপোর্ট অনুযায়ী, নন-কমার্শিয়াল গ্রুপ 1,600 বাই কন্ট্রাক্ট এবং 100 সেল কন্ট্রাক্ট ক্লোজ করেছে, যার ফলে নেট পজিশনের সংখ্যা 1,500 কন্ট্রাক্টের বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, এটি পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নির্দেশ করে না।
মৌলিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদে পাউন্ড ক্রয়ের জন্য কোনো যৌক্তিকতা পাওয়া যাচ্ছে না। এর পরিবর্তে, পাউন্ড নতুন করে বৈশ্বিক নিম্নমুখী প্রবণতার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এর ফলে, নেট পজিশনের সংখ্যা আরও হ্রাস পেতে পারে, যা পাউন্ডের চাহিদার আরও হ্রাস নির্দেশ করে।
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী প্রবণতা প্রদর্শন করছে, যেখানে সাম্প্রতিক কারেকশন দ্রুত শেষ হয়েছে। বর্তমানে, টেকনিক্যাল কারেকশনের প্রয়োজনীয়তা ছাড়া পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধির জন্য কোনো উল্লেখযোগ্য কারণ নেই। কয়েক সপ্তাহ ধরে এই ধরনের প্রবণতা স্থিতিশীল রয়েছে, এবং আমরা মধ্যমেয়াদে পাউন্ডের আরও দরপতনের প্রত্যাশা করছি।
১৩ জানুয়ারিতে আমরা নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো নির্ধারণ করেছি: 1.2052, 1.2109, 1.2215, 1.2269, 1.2349, 1.2429-1.2445, 1.2511, 1.2605-1.2620, 1.2691-1.2701, 1.2796-1.2816, এবং 1.2863। সেনকৌ স্প্যান বি লাইন (1.2478) এবং এবং কিজুন-সেন (1.2382) লেভেলগুলোও গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যাল প্রদান করতে পারে। মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ২০ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন পর ব্রেকইভেনে স্টপ লস অর্ডার সেট করা উচিত, যাতে ভুল সিগন্যালের কারণে সম্ভাব্য লোকসান থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়। মনে রাখবেন যে ইচিমোকু সূচকের লাইনগুলো দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, যা ট্রেডিং সিগন্যাল সনাক্ত করার সময় বিবেচনা করা উচিত।
সোমবার যুক্তরাজ্য বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে পাউন্ড বেশ নাজুক অবস্থায় রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে মার্কেটে ট্রেডিং শুরু হওয়ার পরেই আবার দরপতন শুরু হতে পারে। সাধারণত কিছু ট্রেডার উইকেন্ডের আগে লাভ নিশ্চিত করতে চায়; তবে, এবার তা হয়নি, যা মার্কেটে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী বিয়ারিশ প্রবণতা নির্দেশ করে।